রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩১ অপরাহ্ন
বগুড়া শহরের পুরান বগুড়ায় আবির্ভাব হয়েছে নতুন এক ভূমি দস্যু আলী হাসানের, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে দখল করছে জমি, নির্মাণ করছে ভবন সহ নানান স্থাপনা । রাতারাতি ট্রাক হেলপার থেকে বনে গেছেন শত কোটি টাকার মালিক। গড়ে তুলেছে বাড়ী, গাড়ী, তেলের পাম্প (আলী হাসান ফিলিং স্টেশন), পুরান বগুড়ায় দখল করে নিয়েছে কয়েক একর জমি, কিনেছেন ট্রাক, ট্যাংক লরি সহ অনেক কিছু । গড়ে তুলেছেন, ভূমি দস্যু বাহিনী সহ ব্যক্তিগত বাহিনী, নাম ভাঙ্গছে বিভিন্ন প্রশাসনিক কর্মকর্তার। তার অত্যচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। জানা গেছে বগুড়া সদরের শিকারপুরের বাসিন্দা মতিয়ার রহমান ও খান্দার মালগ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম ওরফে নুরু কামার এর সাথে পুরান বগুড়ার আলী হাসানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জায়গা দখল সংক্রান্ত ঝামেলা চলে আসছে। উপরোক্ত বাদী দুই জনের ২০ এবং ১০ মোট ৩০ শতাংশ জায়গা যার বর্ননা জেএল নং- ১২৩, খতিয়ান নং- ১২২, দাগ নং-৮৭৪ এবং অপর ১৮ এর ১০ শতাংশ জায়গার, জেএল নং-১২৩, সি এস খতিয়ান নং- ৯২, দাগ নং-৮৮৮, উভয়ের জমির মৌজা- পুরান বগুড়া। দীর্ঘদীন যাবৎ এই জায়গা গুলোর মালিকানা দাবী করে আসছে উভয় পক্ষ, দীর্ঘদিন হলো কোর্টে মামলা চলে আসছে এই জায়গা গুলোর এবং কোর্ট থেকে ঐ ২০ শতাংশ জমির উপর আদালত নিষেধাজ্ঞা আরোপ অর্থাৎ States quo দেয়া হয়েছে । এবং আরেক জায়গার মালিক নুরু কামারের ১০ শতাংশ জায়গাও কোর্টে মামলাধীন। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আলী হাসান জোর পুর্বক স্থাপনা নির্মাণ করেছে এবং করছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আলী হাসান জোর পুর্বক ঐ জায়গা গুলোতে তার লোকজন দিয়ে কাজ করতে থাকলে, বাদী মতিয়ার রহমান মন্টু, ১৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস চারমাথায়, কাউন্সিলর আমিনুর ইসলামের কাছে একটি লিখিত আকারে অভিযোগ প্রদান করেন। তাৎক্ষনিক বিবাদী আলী হাসানকে ওয়ার্ড অফিসে ডেকে মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কাজ বন্ধ রাখার নিদের্শ দেন। কিন্তু আলী হাসান, কাউন্সিলর ও আদালতের কোন কথা না মেনেই অদৃশ্য শক্তির মাধ্যমে নির্মাণ কাজ অব্যাহত রাখেন । এ ব্যাপারে আবার মতিয়ার রহমান বাদী হয়ে আলী হাসান কে আসামি করে বগুড়া সদর থানায় অভিযোগ ও জিডি করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসী জানায়, এই ভূমিদস্যু আলী হাসান বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানুষের জমির দলিল নকল করে, কার জায়গা কখন দখল করে তার কোন ঠিক-ঠিকানা নেই। তার অত্যাচারে আমরা এলাকাবাসী সব সময় ভয়ে থাকি, আলী হাসান এর আছে মাদক বাহিনী, জমি দখল বাহিনী সহ সমাজের বাজে লোকজনের সাথে উঠাবসা। এলাকাবাসী আরো জানান, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলেই, শুনতে হয় নানান ধরনের হুমকি ধামকি ও আলী হাসান কোনো এক মন্ত্রণালয়ের সচিব তাঁর আত্মীয়র গরম দেখায় ও পুলিশি হয়রানির হুমকি ধামকি প্রদান করে এবং বলে বগুড়া সদর থানার ওসি হুমায়ন কবির আমার ধর্ম ভাই, কিছু বললেই ওসি সাহেবের গরম দেখায়। আমরা এলাকাবাসী, আলী হাসানের হুমকির ভয়ে মূখ খুলতে পারি না। এ বিষয়ে গনমাধ্যম থেকে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ন কবিরের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ওসি গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, আমি ব্যক্তিগত ভাবে আলী হাসানকে চিনি, কিন্তু সে আমার কোন ধর্ম ভাই নয়, তার কোন অপকর্মের সাথে আমার কোন প্রকার সম্পৃক্ততা বা সহযোগিতা নেই। আলী হাসান জবরদখল বা যে কোন অন্যয় করলে আইনানুগ সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভুক্তভোগীরা জানান, আলী হাসান, ওসি হুমায়ুন কবিরকে ধর্ম ভাই বানানোর কারনে, আলী হাসানের মা পূর্ব ওছিয়ত করা অনুযায়ী ওসি হুমায়ুন কবিরকে ৫ শতাংশ জায়গা দলিল করে দেয়ার কথা রয়েছে। এবং ছোট খাটো যে কোন ব্যপারে আলী হাসান পুলিশ নিয়ে আসে। বগুড়া পৌরসভার কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ আমিনুর ইসলামের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, অভিযোগকারী বাদী মতিউর রহমান মন্টু আমার কাছে লিখিত একটি অভিযোগ জমা দেন, অভিযোগে উল্ল্যেখ করেন, অভিযুক্ত বিবাদী আলী হাসান আদালতের নিদের্শ অমান্য করে তার উক্ত ২০ শতাংশ জায়গায় অবৈধ ভাবে স্থাপনা নির্মাণ করছে। আমি অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত বিবাদী আলী হাসানকে আমার অফিসে ডেকে কাজ বন্ধের নির্দেশনা দেই, আলি হাসান সেই নির্দেশনা অমান্য করে রাতের আধারে গোপনে ঐ জায়গার উপরে স্থাপনা নির্মাণ করে। অদৃশ্য শক্তির পেশিবলে কোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশ অমান্য করে আলি হাসান অবৈধ ভাবে স্থাপনা নির্মাণ করছে, পরবর্তীতে আমি আবারও কাজ বন্ধ করে দেই এবং অভিযুক্ত আলি হাসানকে কোর্ট অবমাননার জন্য ও জবরদখল করার জন্য তার বিরুদ্ধে আইনানুগ সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়ে দেই। প্যানেল মেয়র আমিনুর ইসলাম আরো বলেন, আমার ওয়ার্ডে কোন ধরনের জবর দখলকারী, ভূমি দস্যু, মাদককারবারী ও অন্যায়ের ঠাই নেই, এজন্য আমি সকল ধরনের আইনগত ব্যাবস্থা গ্রহণ করবো। এ বিষয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা অভিযুক্ত বিবাদী আলী হাসানের সাথে তার ব্যক্তিগত মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলেও, তিনি মুঠোফোন ও ক্যামেরার সামনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। আলী হাসান এর বিরুদ্ধে আকেকটি জিডি দায়ের করেছেন শহরের পুরান বগুড়া এলাকার তারই এক প্রতিবেশী রফিকুল ইসলামের স্ত্রী ফেরদৌসী খাতুন। আলী হাসান কে অভিযুক্ত করে পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে গত ০৬/১০/২০২০ইং তারিখে বগুড়া সদর থানায় একটি জিডি করে। জিডি নং-(৩৩১) ফেরদৌসী জিডিতে অভিযোগ করছেন বিবাদী হাসান পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে ও তার পরিবারকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ, বাড়ীতে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে, বাড়ী মুল প্রবেশদ্বার গেইটে লাথি সহ প্রাণনাশের হুমকি এবং বিভিন্ন ভাবে দীর্ঘদিন ধরে ভয়-ভীতি প্রদান করে আসছেন। এতে করে ফেরদৌসী ভীত সন্তস্থ হয়ে যাওয়ায় আইনের আশ্রয় নিয়েছেন এবং ভূমিদস্যু আলী হাসানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীগন ও এলাকাবাসীরা ।
গনমাধ্যমের প্রাথমিক তদন্তে এ অভিযোগ উঠেছে আলী হাসান এর নামে।